ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার-কাঁচা হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার আমরা অনেকেই জানিনা। ত্বককে দাগ হীন করতে কাঁচা হলুদের কাজ অনন্য। এমনকি সূর্যের ক্ষতিকর রোশনি থেকে রক্ষা পেতে এটি সহায়ক। কাঁচা হলুদ ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে অত্যন্ত কার্যকারী।
ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানতে পারবেন ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার গুলো। মুখের ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ব্রণ হওয়া প্রতিরোধ করে।আর এই কাঁচা হলুদের সাথে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে টারমারিক ফেসিয়াল ক্লিনজার যা ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী।

পেজ সূচিপত্র-নিচের যে অংশ করতে চান ক্লিক করুন

কাঁচা হলুদে যেসব উপকার পাবেন

কাঁচা হলুদের গুণাবলী সম্পর্কে অনেকেই অব্যাহত।আয়ুর্বেদেও হলুদের উপকারিতা উল্লেখ রয়েছে।যে কোন রকমের ইনস্ট্রাকশন হলে কাঁচা হলুদের জড়ি মেলা ভার।ত্বকের সমস্যা লিভারের সমস্যা পেশির সমস্যা কেটে যাওয়া বা ছড়ে যাওয়ার জন্য হলুদ উপকারী।এছাড়া হলুদের মধ্যে এমন উপাদান থাকে যার ফলে গ্যাস্ট্রিক  পেপটিক এবং গ্যাস্ট্রিক আলসার ইত্যাদির জন্যও উপকারী।এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী চিকিৎসকরা প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
কাঁচা হলুদ খাওয়ার একটি পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন।এক টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ গুঁড়ো এবং ১০০ গ্রাম মধু নিন এবার এই দুটোকে ভালো করে মিশিয়ে নিন।প্রতিবেদনটি থেকে জানা গিয়েছে ফ্লু, জ্বর সর্দি কাশি হলে এই মিশ্রণ এক ঘন্টা অন্তর অন্তর খান।দ্বিতীয় দিন দুই ঘন্টা অন্তর অন্তর খান।রোজ অন্তত দুইবার হলুদ ও মধু খেলে উল্লেখিত রোগ গুলো থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চিকিৎসকটা জানিয়েছেন এই মিশ্রণ এন্টিবায়োটিকের কাজ করে।

ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার

কাঁচা হলুদ আমাদের গায়ের রং উজ্জ্বল হতে সাহায্য করে।হলুদ আমাদের ত্বক ভিতর থেকে সুন্দর করে তুলে।ত্বকের যত্নে হলুদের ব্যবহার দীর্ঘদিনের।ত্বকের যত্নে হলুদ নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু হলুদ মেখে রোদে বাহির হওয়া যাবে না।ত্বকের যত্নে হলুদের ব্যবহার রাতে করতে হয়, দিনের বেলায় নয়।যাদের মুখে ব্রণের সমস্যা আছে তারা কাঁচা হলুদের রস মুলতানি মাটির সাথে মিশিয়ে ও নিম পাতার রস একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন।

মিশ্রণটি মুখে শুকিয়ে গেলে গোলাপজল দিয়ে ম্যাসাজ করে প্যাকটিন নরম করে নিতে হবে এবং পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আপনি যদি এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করেন অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।গোসলের আগে কাঁচা হলুদ মধু ডিমের কুসুম ও নারিকেলের তেল মিশিয়ে ব্যাগ তৈরি করে নিয়ে পুরো মুখে গলায় লাগিয়ে রাখতে হবে এবং ৩০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।হলুদের গুড়ো সাথে শসার রস বা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগাতে 
হবে এবং ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।ফলে ত্বক অনেক মসৃন হয়ে যাবে।কাঁচা হলুদ বেটে সারা শরীরে স্ক্রাব করে ব্যবহার করতে হবে এর ফলে ত্বক কোমল হবে। সুন্দর একটা ত্বক আমরা সকলেই চাই।ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার করে থাকে কিন্তু কাঁচা হলুদ ব্যবহারের কিছু নিয়ম রয়েছে এগুলো মেনে চললে কাঁচা হলুদ ত্বকের যত্নে ব্রাশ কার্যকারী হয়। কাঁচা হলুদের থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের ব্রণ সারাতে দারুন উপকারী।

কাঁচা হলুদের গুঁড়ো(Turmeric Powder)

আপনি যদি রোজ সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খান তাহলে এক মাসের মধ্যে আপনি কাঁচা হলুদ খাওয়ার দুর্দান্ত ফলাফল বুঝতে পারবেন। বিজ্ঞানীরা বলেছেন আপনি যদি রোজ সকালে ২৫০ মিলিগ্রাম হলুদই যথেষ্ট। গ্যাস অম্বল থেকে মুক্তি পাবেন। গ্যাস অম্বল থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। আর্থারাইটিসের এবং বয়সজনিত নানা রোগের প্রকোপ কমায়। ক্যান্সার নিরোধক ও হার্ট ভালো রাখে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদ গুঁড়োর উপকারিতা।

ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার ও হলুদ গুঁড়োর উপকারিতা

কাঁচা হলুদ ও দুধ= হলুদ ও দুধের মিশ্রণ ত্বকের ক্ষতি করে এমন উপাদানের বিরুদ্ধে কাজ করে ত্বককে সুস্থ রাখেকাঁচা হলুদ ও মধুঃ ত্বকের ভেতরের আদ্রতা রক্ষা করে উজ্জ্বল ত্বক ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এন্টিফাঙ্গাল এবং আন্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ হলুদ মুখের ব্রণ এবং ব্রণের মতো সম্পর্কিত আরো অনেক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।গ্লাসি স্কিন ফেসপ্যাক এর অন্যতম উপাদান হচ্ছে কাঁচা হলুদের পাউডার।
কাঁচা হলুদের গুঁড়োর উপকারিতা
এই ফেস ট্র্যাক টকের যাবতীয় সকল সমস্যার দূর করে তো উজ্জ্বল ও টানটান করে তোলে।

কাঁচা হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা

কাঁচা হলুদ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক।তাই কাটা এবং পোড়া জায়গায় হলুদ বাটা লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায় ও তাড়াতাড়ি ব্যথা এবং দাগের উপশম ঘটে।হলুদ যখন ফুলকপির সাথে মিলিত হয় তখন এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়।স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধকারী ও অন্তরের ক্যান্সার নিরাময়কারী। মেলানোমা প্রতিরোধ এবং আত্মহত্যা করতে মেলানোমা কোষ বিদ্যমান হতে পারে। 

শিশুদের লিউকেমিয়া ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।হলুদের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য বাঁধ এবং ফলানো বাত এর জন্য একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা।হলুদ কেমন ড্রাগের প্রভাব এবং তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম করে। গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ অগণ্যশয়ের ক্যান্সার উপশমে চমৎকার কাজ করে।টিউমার হওয়া বন্ধ ও নতুন রক্ত উৎপাদন বৃদ্ধি করে।কাঁচা হলুদের গাট পিষে ঘিয়ে ভেজে চিনি মিশিয়ে নিয়মিত কিছুদিন খেলে ডায়াবেটিস সারে।এটি চর্বি বিপাকের সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। 

দীর্ঘ বিষন্নতার জন্য একটি চিকিৎসা হিসাবে চীনা দেশে হলুদের ওষুধ ব্যবহার করা হয়।মানসিক অবসাদ রোধ করতে ব্যবহৃত এন্টি ডিপ্রেস্যান্টের এর কাজও করে।এছাড়া এই উপাদানের রয়েছে অ্যাাস্পিরিনের গুণ।এর প্রয়োগে ভ্যাস্কুলার থ্রম্বেসিস আক্রান্ত রোগীর রক্তের ঘনত্বের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।সর্দি কাশির ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয় হলুদ।কাশি কমাতে হলে হলুদের রস খেয়ে নিন কয়েক চামচ কিংবা এক টুকরো হলুদের সাথে মধু মাখেরটা মুখের মাঝে রেখে আস্তে আস্তে চুষতে পারেন।
সেটা করতে না পারলে এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন।কয়েক বার সে মনেই নিরাময় হবে কাশি ও গলা ব্যথা উভয়ে। হলুদের মধ্যে প্রোটিন ভিটামিন খনিজ লবণ ফসফরাস ক্যালসিয়াম লোহা প্রভৃতি নানান পদার্থ বিদ্যমান রয়েছে।তাই হলুদ খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।যেমন বাচ্চাদের লিউকোমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় নিয়মিত কাঁচা হলুদের রস এবং করলে।

প্রতিদিন দুধ বা পানির সাথে হলুদের গুঁড়ো বা রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে অনেকটাই সুস্থ থাকা সম্ভব।হলুদ গায়ের রং ফর্সা ও লাবণ্যময় করে তোলে।প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেলে ধীরে ধীরে ত্বকের রং ফর্সা হয়।যেকোনো চর্ম রোগের জন্য হলুদ অনেক উপকারী।কাঁচা হলুদের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে শরীরে মাখলে একজিমা এলার্জি চুলকানি ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।হলুদদের অন্য এক উপাদান পলিফেলন

চোখের অসুখ ক্রনিক এন্টিয়ার ইউভিইটিস সারাতে কার্টিকোস্টেরয়ডের কাজ করে।উল্লেখ্য এ রোগের প্রকোপে চোখ প্রচন্ড জ্বালা ও প্রদাহ দেখা দেয়।

লেখক এর শেষ কথা

প্রিয় পাঠক স্যার/ম্যাম, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার ও কাঁচা হলুদ গুড়ার উপকারিতা।কাঁচা হলুদের কিছু স্বাস্থ্যকর টিপসগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানালাম।আপনারা যদি আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আপনার নিশ্চয়ই কাঁচা হলুদের উপকার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছন।আশা করা যায় আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার সঠিকভাবে করতে পারবেন।আপনার যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে এবং উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদেরকে জানানোর জন্য শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url