মুলতানি মাটির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আজকে আমরা আপনাদের জানাবো মুলতানি মাটির উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি এবং মুলতানি মাটির ব্যবহারের নিয়ম। মূলত মুলতানি মাটি একটি কাদামাটির মতো পদার্থ যা বেশিরভাগ অ্যালমনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট দিয়ে গঠিত। মুলতানি মাটির ত্বকের যত্নের পণ্যগুলিতে পাওয়া যায়।
মুলতানি মাটি ত্বকের বলিরেখা,ব্রণ,ব্রনের দাগ,কালচে ভাব,ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ইত্যাদি এগুলোর জন্য মুলতানি মাটির ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকারী। আমরা অনেকেই আছি যারা মুলতানি মাটির সাথে পরিচিত নয়। তাই চলুন আজকে আপনাদের মুলতানি মাটির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
সূচিপত্র-নিচের যে অংশ পড়তে চান ক্লিক করুন
শুষ্ক ত্বকে মুলতানি মাটির ব্যবহার
শুষ্ক ত্বকে মুলতানি মাটি ব্যবহারের ফলে সাথে সাথে মুখের সমস্ত ময়লা দূর হয়ে মুখে এক অপরূপ উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে। মুলতানি মাটি অর্গানিক ভাবে এই উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে। মুলতানি মাটি এই উপাদানটি আমাদের ত্বকের গভীরে গিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে এবং রক্ত সঞ্চালন বজায় রাখে। মুলতানি মাটি কোন সাধারণ মাটি নয় এটিতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম এবং আয়রন এর মত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
মূলত মুলতানি মাটিতে এই খনিজ উপাদান গুলো উপস্থিতির কারণে এটি অনেক মূল্যবান পদার্থ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এর ব্যবহারে মিলবে অনেক উপকারিতা তাই আপনাকে জানতে হবে এর সঠিক ব্যবহার। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল চুষে নিতে সাহায্য করে এর ফলে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে এর ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকরী ও বেশ জনপ্রিয়। মুলতানি মাটি ব্যবহারে ফলে মুখের রুক্ষ আদ্রতা দূর হয়ে যায়। নিজে উপকৃত হয়েছি মুলতানি মাটি ব্যবহার করে।
আরো পড়ুনঃ শরীর ঠিক রাখতে সকালের ২০টি ব্যায়াম ও নিয়ম
আমরা অনেক মানুষ আছি যাদের মুখের ত্বক অয়েলি টাইপের। তারা যদি তাদের এই সমস্যা দূর করতে চায় তাহলে তারা মুলতানি মাটি এবং গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগাতে পারেন এতে করে আপনার মুখে তৈলাক্ত ভাব নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং আপনার মুখের ত্বক সুন্দর রাখবে। মাথায় রাখবেন ত্বক বেশি শুষ্ক হলে মুলতানি মাটি ব্যবহার করার দরকার নেই। মুলতানি মাটি ত্বকের শুষ্কতা দূর রাখে এবং এর পাশাপাশি অবস্থিত অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে।
যা আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে সংক্রমণ হতে মুক্তি দিয়ে থাকে। পারেন তাহলে মুলতানি মাটির সাথে চার থেকে পাঁচটি আঙ্গুরের রস মিশিয়ে তবে ব্যবহার করুন এতে আপনার ত্বকের শুষ্ক ভাব হয়ে যাবে।তাই চলুন আপনাদের মুলতানি মাটির উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানিয়ে দেয়।
মুলতানি মাটি ব্যবহার করার নিয়ম
বর্তমান সময়ে এই প্রজন্মে সবাই এখন কেমিক্যাল যুক্ত আর না হয় ডাক্তারের বড় মসজিদ বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে আমরা মুখের উজ্জ্বলতা নিয়ে আসি। কিন্তু প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার করে আসা এই প্রাকৃতিক নিয়মে মুখের উজ্জ্বলতা আরো বেশি বৃদ্ধি পায় এবং আরো অনেক উপকার করে এটা আমরা অনেকেই জানিনা। আবার কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তাও জানিনা।চলুন আপনাদের জানিয়ে দিই কিভাবে ব্যবহার করবেন মুলতানি মাটি।
মুলতানি মাটি ব্যবহারের প্রথম নিয়ম হচ্ছে মাটি টি প্রথমে হয় আপনাকে গুঁড়ো করে নিতে হবে না হলে বিভিন্ন উপাদান দিয়ে পেস্ট বানায় নিতে হবে না হলে শুধুমাত্র পানি অথবা গোলাপ জল দিয়ে হালকা করে নরম করে কাদামাটি করে নিতে হবে। এরপর এটাকে ভালো মতো মিশিয়ে নরম করে আপনার মুখে পরিমাণ অনুযায়ী হাত দিয়ে অথবা ফেসিয়াল ব্রাশ দিয়ে লাগাতে হবে। মনে রাখবেন এমনভাবে মাটি টি নরম করবেন যাতে আপনার মুখে একটা লেয়ার পড়ে।
এভাবে আপনি আপনার পুরো মুখে ভালো মতো লাগিয়ে নিবেন। এরপর আপনি একটু হালকা বাতাস অথবা একটু রোদ্রউজ্জ্বল জায়গাতে গিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মতো বসবেন যাতে করে আপনার লেয়ারটা ভালোমতো পড়ে এবং সুন্দরভাবে শুকিয়ে যায়। তারপর যখন আপনার মুখ সম্পূর্ণটাই ভালো মতো শুকিয়ে যাবে এখন আপনি হাতে একটু হালকা পানি নিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট মালিশ করবেন। এরপর আপনি ঠান্ডা পানি দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে ফেলবেন।
আরো পড়ুনঃ আখরোট ও মধুর মিশ্রণ খাওয়ার উপকারিতা
যেভাবে বললাম এভাবে আপনি দিনে দুই থেকে তিনবার করবেন। তাহলে আপনি ৩ থেকে ৫দিনের মধ্যেই আপনার মুখের একটা ভালো ফলাফল দেখতে পাবেন। আপনার এই প্রসেসটা নিশ্চিন্তে করতে পারেন কারণ এইভাবে করে আমি নিজে উপকৃত হয়েছি এবং তোদের সাথে শেয়ার করছি। আপনি যদি নিয়মিত দিনে দুই থেকে তিনবার করতে পারেন তাহলে আপনি এর উপর খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন। চলুন আপনাদের আরো একটু বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দিইঃ-
- আপনার মুখে ব্রণ ও ব্রনের দাগ দূর করতে আপনি মুলতানি মাটির সাথে নিমপাতা বেটে পেস্ট তৈরি করুন এবং এই পেস্ট ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে দিয়ে শুকিয়ে নিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- ব্ল্যাকহেড ও হোয়াইট দূর করতে আপনি কাজুবাদ গ্লিসারিনের সাথে এক চা চামচ পরিমাণ মুলতানি মাটি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর এটিকে লাগিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ও কালচে ভাব দূর করতে মুলতানি মাটির সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সেটি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- না যদি মুলতানি মাটি ছাড়া অন্য কোন উপাদান না থাকে তাহলে আপনি শুধু এমনি পানিতে মাটিটি নরম করে মুখে লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলে দিলে আপনি তাও উপকৃত হবেন।
- আপনি যদি আপনার গায়ের রং উজ্জ্বল শুষ্ক মুক্ত করতে চান তাহলে আপনি মুলতানি মাটির সঙ্গে কাঁচা হলুদ এবং সামান্য পরিমাণ বেসন দিয়ে দেশ তৈরি করুন এবং সম্পূর্ণ গায়ে লাগিয়ে দেন এরপর শুকিয়ে গেলেন ধুয়ে ফেলে দিন।
- আপনি চাইলে নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে চুলের যত্নে হেয়ারপ্যাক হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি ওপরে উল্লেখিত দেওয়ার নিয়ম গুলো অনুসরণ করে মুলতানি মাটি ব্যবহার করেন তাহলে আপনি ১০০% উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ। কারণ আপনাদের বলা জিনিসগুলো আমি নিজে করে থাকি এবং আমি নিজে উপকৃত হয়েছি। তাই আপনার সমস্যা অনুযায়ী যে নিয়মগুলো বললাম আপনি সেগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ফলাফল পেয়ে যাবেন। চলুন এবার আপনাদের মুলতানি মাটি ও গোলাপজলের ব্যবহার সম্পর্কে জানিয়ে দেই।
মুলতানি মাটি ও গোলাপ জলের ব্যবহার
বর্তমান সময়ে আমরা সবাই এমন হয়ে গেছি যে, আমাদের মুখের যেকোনো সমস্যা হলেই আমরা প্রথমেই নানান ধরনের ফেসওয়াশ নিয়ে ভাবতে থাকি ও পড়ে কারো না কারো পরামর্শ নিয়ে একটা ব্যবহার করি। আমরা আবার মনে করি মুখ থেকে অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করতে ফেসওয়াশই একমাত্র ভরসা। কিন্তু আমরা এটা অনেকেই জানিনা যে ফেসওয়াশ সাময়িক রেহাই দেয় তৈলাক্ত চিটচিটে ভাব থেকে। ফেসওয়াশ দীর্ঘ সময়ের জন্য সমস্যার সমাধান হয় না।
আপনি যদি এই সমস্যা থেকে একবারই নিস্তার পেতে চান ও এককালীন সময় সমাধান পেতে চান তাহলে আপনাকে এর জন্য ঘরোয়া পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে। আপনি একটা উপাদান তৈরি করে নিলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। আমরা সবাই জানি গরমকাল আসলে সবার মুখই লাগতো চেটচেটে ভাব হয়ে যায়। আবার যাদের ত্বক তৈলাক্ত ত্বক না তাদের গরমের ঘামের জন্য মুখের আদ্রতা নষ্ট হয়ে গিয়ে চিঠ চিটে ভাব বৃদ্ধি পায়।
আর এসবের জন্য মূলত আমাদের ত্বকের নিস্তেজ দেখা দেয় এবং অনেক সময় ব্রণের সমস্যাও দেখা যায় এবং আস্তে আস্তে ব্রণ বেশি হয়ে যায়। আর এসব বিষয়গুলো সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের যা করতে হবে তা হল, মুলতানি মাটি ও গোলাপজলের ব্যবহার। এসব সমস্যার সমন্বয়ের জন্য আপনি মুলতানি মাটি ও গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে গারো পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর আপনি ধুয়ে ফেলে দিন তাহলে দেখবেন আপনার মুখের তৈলাক্ত ভাবা নেই।
এতগুলো বিষয় জানার পর অন্ততপক্ষে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে ত্বকের উপর মুলতানি মাটির দুর্দান্ত এক্সফোলিয়েটর হিসাবে কাজ করে। কারণ এই উপাদান সমৃদ্ধ আমি নিজে ব্যবহার করি এবং এর উপকার সম্পূর্ণ রূপে আমি পেয়েছি। এটিতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই মৃত কোষ পরিষ্কার করে দেয় এবং স্ক্রাব হিসেবে মুলতানি মাটি ব্যবহার করলেও ত্বকের উপর কোন ধরনের চাপ পড়ে না। দূষণের জেরে আমাদের ত্বকের উপর মারাত্মক চাপ পড়ে।
এর কারণে অনেক সময় দেখা যায় যে আমাদের ক টক শুষ্ক হয়ে জ্বলতে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোলাপজল অনুদানি মাটি একসাথে মিশিয়ে বিশ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোমতো মালিশ করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনি নিয়মিত ব্যবহার করলে চিরতরে এই সমস্যা থাকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। মাটি ও গোলাপ জলের মিশ্রিত আমাদের মুখে দেওয়ার ফলে ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি মুলতানি মাটির ব্ল্যাকহেড হেডস এর সমস্যা দূর করে।
আরো পড়ুনঃ ছায়াযুক্ত জায়গায় কোন সবজি ফল চাষ করা যায়
গোলাপজল ও মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল চুষে নিয়ে ওপেন স্পর্শের সমস্যা দূর করে থাকে। এতে আমাদের ত্বকে অকালে বার্ধক্য দেখা দেয় না। ত্বক ঠিক রাখার জন্য আপনি যখন ফেসওয়াশ ব্যবহার করেন, তখন আপনি গোলাপ জল মুলতানি মাটি মিশিয়ে মুখে মাখতে পারেন এতে করে আপনার মুখে আগের থেকে বেশি উজ্জ্বলতা দিবে এবং আপনার ত্বকের জন্য বেশি কার্যকরীতা হবে।
মুলতানি মাটির উপকারিতা
আপনারা যারা আর্টিকেলটি প্রথম থেকে এ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে এসেছেন তারা জেনে গেছেন মুলতানি মাটি ব্যবহারের নিয়ম ও উপকারিতা কি হতে পারে। আমরা হয়তো এটা ব্যবহার করি কিন্তু এর উপকারিতা সম্পর্কে জানি না। তাই চলুন আপনাদের জন্য মুলতানি মাটির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
- রোদে পোড়া ভাব দূর করে এবং ব্রণ হওয়ার পর ত্বকের ছোট ছোট গর্ত দেখা যায় তা দূর করে
- ত্বককে পরিষ্কার করতে মুলতানি মাটি ক্লিনজার হিসাবে কাজ করে।
- মুখের ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইট হেডস দূর করতে মুলতানি মাটি দারুণভাবে কাজ করে।
- মুলতানি মাটি আপনার ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও বজায় রাখে।
- মুলতানি মাটি আপনার ত্বকের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে ও আপনার ত্বকে নিস্তেজ সতেজ ও সুস্থ রাখে।
- ত্বকের টানটান রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতে মুলতানি মাটির কার্যকারিতা অপরিসীম।
- হাত ও পায়ের রং ফর্সা করতে মুলতানি মাটি অনেক কার্যকরী। তবে এটি আপনাকে একটি উপাদান বানিয়ে পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করতে।
- মসৃণ ত্বকের জন্য মুলতানি মাটির উপকারিতা অনেক।
- ঠোঁটের ময়লা দূর করতে অনেক কার্যকরী মুলতানি মাটি।(অল্প পরিমাণে ৩থেকে ৪মিনিট লাগিয়ে রাখবেন)।
- ত্বকের শুষ্কতা দূর করবে।
- চুলের যত্নে মুলতানি মাটি অপরিসীম কাজ করে।(সম্পূর্ণরূপে চুল পরিষ্কার করে এবং চুল ঝলমলে উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে)।
মুলতানি মাটির অপকারিতা
আপনারা যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চিত এতক্ষণে বুঝে গেছেন মুলতানি মাটির অপকারিতা নেই বললেই চলে।নেই বললেও ভুল হবে, আমরা অনেকেই আছি যারা অনেক ধরনের এলার্জি সমস্যায় ভোগান্তি করে থাকে। এমনও হতে পারে মুলতানি মাটি এত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের মুলতানি মাটি ব্যবহার করার ফলে এলার্জির পরিমাণ বেশি হয়ে যায়।
তবে একটা জিনিস আশা করা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুলতানি মাটি এমন কোন অপকারিতা নেই বা এই পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যার মধ্যে অনেক ধরনের খনিজ উপাদান আছে। এর ফলে মুলতানি মাটিউপকারিতা অনেক বেশি। তবে আপনাদের যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তারা অন্ততপক্ষে একবার ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে এটি ব্যবহার করবেন। এতে করে আপনার সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি কমে আসবে। আশা করি সম্পূর্ণটা বুঝতে পেরেছেন।
মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক তৈরি
আমরা এতক্ষণ ধরে সম্পূর্ণ আর্টিকেলে মুলতানি মাটির উপকারিতা অপকারিতা ব্যবহার এসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। কিন্তু ওকে বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমাদের বিভিন্ন রকম জিনিস ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এই আর্টিকেল পড়ার পর থেকে আপনাকে আর বিভিন্ন জিনিস বাইরে থেকে কেমিক্যাল যুক্ত ফেসওয়াশ বা ক্রিম নিয়ে আসতে হবে না। কোন কোন সমস্যার জন্য কোন কোন ফেসপ্যাক ও কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি করবেন তা আমরা এখন আপনাকে বিস্তারিত জানাবো।
- তৈলাক্ত ত্বকের জন্য= বানানোর উপকরণ, ৪ চা চামচ মুলতানি মাটি/২থেকে ৩ চা চামচ গোলাপ জল। বানানো= দুটি উপকরণকে একসাথে করে মিশিয়ে তৈরি করুন। এরপর এটা কি আপনার তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ব্যবহার করুন।
- মসৃণ ত্বকের জন্য= বানানোর উপকরণ, ১ চা চামচ যে কোন বাদামের গুঁড়ো/১ চা চামচ মুলতানি মাটি/১ চা চামচ কাঁচা দুধ। বানানোর নিয়ম= সব উপকরণগুলোকে একসাথে একটি পাত্রে মিশিয়ে মুসলিম দেশ তৈরি করতে হবে এবং এটাকে দুই থেকে তিন মিনিট ঢেকে রেখে দিতে হবে। তারপর আপনি আপনার মুখ পরিষ্কার করে এটিকে মুখে লাগান।
- উজ্জ্বল ত্বকের জন্য= বানানোর উপকরণ,৪চা চামচ মুলতানি মাটি/১ চা চামচ মধু/২ চা চামচ টমেটোর রস/৩ চা চামচ কাঁচা দুধ। বানানোর নিয়ম= সব উপকরণ গুলো আপনি একসাথে একটি পাত্রী নিবেন তারপর সুন্দরভাবে সবগুলোকে একসাথে মিশিয়ে নিবেন। তারপর আপনি আপনার মুখ পরিষ্কার করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
- ডার্ক প্যাচেস থেকে মুক্তি পেতে= উপকরণ,১ চা চামচ দই/২ চা চামচ পুদিনা পাতার গুঁড়ো পাউডার/৩ চা চামচ মুলতানি মাটি। বানানোর নিয়ম= উল্লেখিত সব উপকরণ গুলো একসাথে মিশ ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর আপনার ত্বকের আক্রান্ত স্থানে ১৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রেখে দিন। আর এবার আপনি হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- টান টান ত্বক পাওয়ার জন্য= উপকরণ,১ চা চামচ কাঁচা দুধ/২ চা চামচ চন্দন কাঠের গুঁড়ো/৩ চা চামচ মুলতানি মাটি। বানানোর নিয়ম= উক্ত উপকরণ গুলো একসাথে মিশিয়ে নিন। এরপর আপনার মুখের ভালো মতো লাগিয়ে নিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
- পিগমেেন্টেড ত্বকের জন্য= উপকর,১ চা চামচ অলিভ অয়েল/ ১/২ চা চামচ গাজরের পেস্ট/২ চা চামচ মুলতানি মাটি। বানানোর নিয়ম= সব উপকরণ গুলো একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই ফেসপ্যাকটি আপনার মুখে কিছুক্ষণের জন্য লাগিয়ে রেখে দিন।তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে আপনি সপ্তাহে অন্তত ২ থেক ৩বার ব্যবহার করুন।
- মুখের যেকোনো সমস্যার জন্য ফেসপ্যাক তৈরি= উপকর,২ চা চামচ লেবুর রস/১ চা চামচ কাচাঁ দুধ/২ চা চামচ নিম পাতার পেস্ট/২ চা চামচ টমেটোর রস/১ চা চামচ চন্দনের গুঁড়ো/৪ চা চামচ মুলতানি মাটি।বানানোর নিয়ম= উল্লেখিত উপকরণগুলো সবগুলো একসাথে ভালোমতো মিশিয়ে নিবেন। এরপর গাঢ় করে একটি পেস্ট তৈরি করবেন। এরপর আপনার মুখে আস্তে করে লাগাবেন এবং লেয়ার পড়ে শুকিয়ে গেলে তা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক স্যার/ম্যাম, আজকের আলোচনার মুলতানি মাটির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মুলতানি মাটি ব্যবহারের নিয়ম ও ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম। আশা করছি সমস্ত বিষয়গুলো আপনাদের সত্যের উপর জানাতে পেরেছি এবং আপনারা বুঝতে পেরেছেন। মুলতানি মাটি অনেক প্রাচীন যুগ থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে কিন্তু বর্তমান যুগেই এর প্রচলন হারিয়ে গেছে নতুন নতুন ক্রিম ও ফেসওয়াশের জন্য। কিন্তু এটি একটি চিরস্থায়ী সমস্যা সমাধানের করার মত মাটি।
তাই আপনারা যারা উল্লেখিত সমস্যাগুলোর মধ্যে ভুগছেন তারা বাইরের হাবি জাবি ক্রিম ও ফেসওয়াশ ব্যবহার না করে একবার মুলতানি মাটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আশা করা যায় আপনি নিয়ম মেনে কাজগুলো করলে উপকৃত হবেন। আর আপনাদের তো ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম বলে দিলাম। এই আর্টিকেলটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্য, এটি কোন ওষুধ বা চিকিৎসার অঙ্গ নয়। আপনি এর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে হলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url