লটকন খাওয়ার ৫টি কার্যকারী উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
আমাদের দেশের জনপ্রিয় একটি ফল লটকন। এর ইংরেজি নাম হল Burmese grape ও বৈজ্ঞানিক নাম-Baccaurea sapida। টক মিষ্টি স্বাদের এক দানাদার মুখরোচক ফল লটকন। নানান ফলের ভিড়ে লটকনের গুণের কথা আজও অনেকের অজানা। ফলটিতে ভিটামিন ও খাদ্যশক্তি সহ নানান ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে।
গরমের তীব্রতা কমাতে আর শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করতে লটকন ফল খুবই উপকারী। টক মিষ্টি হলুদ এই রসালো ফলটি আকারে ছোট হলেও হাজার পুষ্টিগুনে ভরা আছে। লটকন এক প্রকার দেশীয় ও অপ্রচলিত ফল, যা অত্যন্ত পুষ্টি ও ঔষধি গুণে ভরপুর। চলুন আমরা আজকে জানি,লটকনের ৫টি কার্যকারি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
সূচিপত্র-নিচের যে অংশ পড়তে চান ক্লিক করুন
লটকনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
ভিটামিন সি'র চমৎকার উৎস হলো লটকন। এছাড়া এতে বিদ্যমান থাকে থায়ামিন ও অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট যাতে মুখে ঘন ঘন ঘা হয় তারা লটকন খান প্রতিদিন। অত্যন্ত পুষ্টিকর সুস্বাদু ফল লটকন। পুষ্টিবিদদের মতে লটকনের কোন ক্ষতিকার উপাদান নেই। খাদ্য শক্তির ভালো উৎস লটকন। প্রায় প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯২ কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি পাওয়া যায় যা একটি কাঁঠাল এর তুলনায় দ্বিগুণ। লটকনে আরো আছে অ্যামাইনো এসিড ও এনজাইম।
বলা যায় যে পরিপক্ক লটকনের প্রতি ১০০ গ্রাম শাঁসে আছে, আমিষ আছে ১.৪২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম-৯ গ্রাম,০.৪৫ গ্রাম চর্বি, আয়রন-৫.৩৪ মিলিগ্রাম,মোট খনিজ পদার্থ বিদ্যমান আছে ০.৯ গ্রাম,০.৩ গ্রাম লৌহ এবং ৯১ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি(লৌহ যা আমাদের শরীরের রক্ত হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে থাকে)। এছাড়ও লটকনের আরো বিদ্যমান রয়েছে ভিটামিন বি১-০.০৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন, ভিটামিন বি২-০.১৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন। মূলত লটকন কে ভিটামিন বি২ সমৃদ্ধ ফল বলে।
আরো পড়ুনঃআখরোট ও মধু একসাথে খাওয়ার উপকারিতা
মৌসুমের সময় ফলটি আমাদের প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। খনিজ, ভিটামিন এবং মিনারেল ভরপুর এই ফলটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী। কিছু গবেষণায় এমনও বলেছে, মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি দিতে পারে নানান উপকারী উপাদান ভরপুর রয়েছে এই লটকোন ফলটিতে। বর্ষাকালে বেশ কিছু রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। জ্বর সর্দি কাশি থেকে দূর থাকতে সাহায্য করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লটকন।
লটকন খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
লটকন খাওয়ার বেশ উপকারিতা হয়েছে যা আমাদের শরীরে ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করতে প্রচুর পরিমাণে সহায়তা করে থাকে। লটকন খেলে আমাদের শরীর সুস্থ সবল রাখতে অনেকটাই কার্যকরী। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকন খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়।
- খাদ্য শক্তির ভালো উৎস হলো লটকন। আমাদের শরীর সক্রিয় রাখতে ও দৈনন্দিন কাজ করতে খাদ্য শক্তির প্রয়োজন হয়। আর এই লটকনের প্রতি 100 গ্রাম ৯২ কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি পাওয়া যায় যা আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের তুলনায়ও প্রায় দ্বিগুণ বেশি।
- লটকনে কিছু পরিমাণে প্রোটিনো ফ্যাট পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকন.১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সহায়তা করে লটকন। লটকনে থাকা বিদ্যমান ভিটামিন বি, টামিন সি,ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে লটকনে। আর এজন্যই গবেষকরা বলেছেন যে এসব উপাদান আমাদের মানবদেহে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
- আপনাদের যাদের অতিরিক্ত মেয়াদ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে লটকন বেশ উপকারী একটি ফল। লটকোন আমাদের মেদ কমাতে অনেক সাহায্য করে। আপনি যদি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তায় থাকেন তাহলে আপনি লটকন খেতে পারেন লটকন খেলে ওজন অনেক দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন লটকন দুই থেকে তিনটি করে খেলে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ হয় আমাদের শরীরের। লটকন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ঢাকা ভিটামিন সি যার শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন অসুখ থেকে আমাদের দূরে রাখে।
- লটকনের অধিক পরিমাণে ক্যালরি থাকে যেমন, ১০০ গ্রাম লটকনে ক্যালরির পরিমাণ ৯২ আবার অন্যদিকে ১০০ গ্রাম কাঠালের ক্যালরি পরিমাণ ৪৬ তাই বলা যায় নিয়মিত লটকন খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের শক্তি পায় এবং শরীর সুস্থ রাখে।
- লটকনের বিদ্যমান থাকা আইরন অ্যানিমিয়া রোগ থেকে দূরে রাখে। অ্যানিমিয়া রোগ মূলত আয়রনের শরবতের কারণেই হয়ে থাকে। তাই নিয়মিত লটকন খেলে আমরা এই মুক্তি পাব এবং এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যাবে।
- লটকনের আরেকটি বিশেষ গুণ হচ্ছে বমি বমি ভাব দূর করতে পারে। লটকনে থাকা পুষ্টিগুণ বমি দূর করার পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।
আমরা একটু আগে উপরে লটকনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আমরা সবাই একটু হলেও বুঝতে পেরেছি লটকনের উপকারিতা কি। লটকনের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে। লটকনে বিদ্যমান থাকা পুষ্টি প্রধান গুলো আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব দূর করে এবং শরীর সুস্থ রাখতে অধিক পরিমাণে সহায়তা করে তাই লটকনের এই উপকারিতা দিকগুলো পাওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই নিয়মিত লটকন খেতে হবে।
আমরা যদি প্রতিদিন নিয়মিত ৫ থেকে ৭ টি লটকন খেতে পারি তাহলে দেখবেন আমাদের শরীরের জন্য এটি অনেক ভালো হবে। আমরা আবার অনেকেই বলে থাকি বা জানার ইচ্ছা থাকে যে লটকন খাওয়ার ক্ষতিকারক দিক কি? তাদের জন্য আমরা বলব লটকনের কোন ক্ষতিকারক কোন একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক খাবার যা সকলের জন্যই ভালো। এই ফলটি আমাদের দেশে এখন বাণিজ্যিক হিসাবে পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার ৫টি কার্যকরী উপকারিতা সম্পর্কে
বর্ষা মৌসুমে নিয়মিত লটকন খেলে বিভিন্ন চর্মরোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। এর কারণ হলো লটকন একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এতে থাকা ভিটামিন সি চর্মরোগ প্রতিরোধে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে। এছাড়াও গরমের তৃষ্ণাও মেটাতে লটকন সক্ষম। এর কারণ এই ফলের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণ মিষ্টি নেই। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরাও রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে এই ফল খাওয়ার মাধ্যমে। ডায়ারিয়া দূর করতে লটকনের পাতার গুঁড়ো অনেক কার্যকরী।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা জানুন
আপনারা যারা আর্টিকেলটি প্রথম থেকে পড়ে আসছেন তারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন লটকনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। এখন ফল আপনারা হয়তো অনেকেই চেনেন কিন্তু আপনারা জানেন না গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কিনা এবং গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা কি? তাই এসব বিষয়গুলো আপনাদের সত্যের উপর জানানোর জন্য আজকের আর্টিকেলটি আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
চলুন আমরা গর্ভাবস্থায় লটকন গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কিখাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি জেনে নিইঃ-
- আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে থাকে= গর্ভাবস্থায় সাধারণ একজন গর্ভবতী মায়ের আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর এই আইরনের ঘাটতি কিছুটা হলেও মেটাতে পারে লটকন। এতে করে সন্তান জন্মদানে কোন সমস্যা হয় না তাই বলা যায় আয়রনের ঘাটতি মেটাতে লটকন ফল খুবই উপকারী
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে= ভোলা যায় যে গর্ভাবস্থায় অনেক সময় নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং এতে করে বাচ্চার মায়ের অনেক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গর্ব অবস্থায় লটকন খাওয়া অনেক উপকারী, মা ও সন্তানের জন্য। তাই গর্ভাবস্থায় আপনি পরিমাণ মতো লটকন ফল খেতে পারেন।
- হাড়ের সঠিক বৃদ্ধিতে= আমরা বারবারই আলোচনা করতেছি লটকনের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। একজন মায়ের এবং শিশুর হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে ভিটামিন সি। তাই গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার অনেক উপকারিতা রইয়াছে।
- লটকন ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে থাকে, তাই বলা যায় গর্ভাবস্থায় লটকন ফল অনেক উপকারী।
- খাদ্য শক্তির যোগান দেয়= আপনারা সবাই জানেন কমবেশি যে গর্ভাবস্থায় সবচাইতে খাদ্যশক্তির প্রয়োজন বেশি প্রয়োজন হয়। কারণ তখন মা শুধু একাই থাকে না, তার সাথে সম্পন্ন থাকে এজন্য বেশি পরিমাণে খাদ্যশক্তির প্রয়োজন হয়। সেজন্য খাবারের পাশাপাশি যদি লটকন ফল খেতে পারেন তাহলে অনেকটা খাদ্যশক্তির যোগান দিবে আপনাদের।তাই বলা যেতে পারে গর্ভবতী নারীদের জন্য এই ফলটির নিয়মিত খাওয়া উচিত।
- পানির পিপাসা মিটাই= গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা হলো ব্যবস্থায় বেশিরভাগ সময় মায়েরা পানির তৃষ্ণায় থাকে। আরিফ প্রাণীর তৃষ্ণা মেটাতে লটকন ফল অনেক উপকারী তাই মা ও শিশুর জন্য গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়াতে পারেন।
- মানসিক অবসাদ দূর করে= গর্ভ অবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা এর ভেতরে আরেকটি হলো মানসিক অবসাদ দূর করে থাকে। গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীরা মানসিক অবসাদ এবং অভিভাবক এরকম সমস্যাই পড়ে তাই এগুলো সমস্যা যদি হয় তাহলে লটকন ফল এগুলো সমস্যা দূর করতে আপনাকে অনেকটাই সহায়তা করবে।
- দেহের আয়রনের অভাব পূরণের জন্য গর্ভবতী নারীদের জন্য লটকন খাওয়া দরকার। কারণ গর্ভবতীদের দেহে আয়রনের অভাব হলে অনাগত বাচ্চার ওজন কমে যাওয়ার ভয় থাকে।
- সবচাইতে বড় সমস্যা হয় প্রসবকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতার সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন ২৭ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন। তোমাকেও হাড়ের গঠনেও আয়রন ক্যালসিয়াম প্রয়োজন আর এই প্রয়োজন উপাদান গুলো লটকনের পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কি জেনে নিন
আমরা যারা উপরের কথাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়লাম তারা এতক্ষণে নিশ্চয় জেনে গেছি গর্ব অবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কিনা। উপরের অংশ পড়ে আপনারা খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি। তারপরে আসুন আপনাদের একটু ভালোভাবে বিস্তারিত ভাবে বলে দিন গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কিনা।
আরো পড়ুনঃ শরীর ঠিক রাখতে সকালের ২০টি ব্যায়াম ও নিয়ম
আপনারা যদি নিয়ম নীতি মেনে গর্ব অবস্থায় লটকন ফল খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি অনেক ভালো ও কার্যকারী উপকারিতা পাবেন। এর কারণ এ লটকন ফলের ভিতরে অনেক হয়েছে যা আপনার এবং আপনার সন্তানের জন্য অনেক ভালো উপকার করবে। উপরে উল্লেখিত সব উপাদান গর্ভবতী শরীরের রক্ত উৎপাদন করে এবং গর্ভের বাচ্চার হাড় গঠনের সহায়তা করে লটকন ফল প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যার শরীর সুস্থ রাখতে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে।
ব্রিঃদ্রঃ= গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার নিরাপদ কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত যে কোন জিনিসই ক্ষতিকারক। লটকন অতিরিক্ত খাওয়া অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় লটকন খেলে অতিরিক্ত খাবেন না। আপনার শরীর ও আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখতে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই খাবেন(অনুরোধক্রমে লেখক)।
লটকনের জাত মাটি ও রোপনের মৌসুম
ভালো ফলন পেতে হলে আমাদের ভালো উন্নত জাতের চারা বা কলম লাগাতে হবে। আমাদের দেশে মূলত কয়েকটি রকমের জাত পাওয়া যায় যেমনঃ-বারি লটকন-১ হল সবচাইতে ভালো জাতের লটকন চারা। এই চারটি আমাদের সমগ্র বাংলাদেশের চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়াও আরেকটি জাত রয়েছে বাউ লটকন-১। আমাদের লটকনের যারা সংগ্রহের পর বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসে রোপন করা সবচেয়ে উত্তম হবে।
তবে কোন সমস্যা নাই যদি আপনি বর্ষা শেষের দিকে অর্থাৎ ভাদ্র-আশ্বিন মাসের চারা লাগান তাও হবে। লটকন গাছটির সাথে যুক্ত পরিবেশ যেমন আম বা কাঁঠালের মত বড় গাছের নিচেও বা ছায়াযুক্ত জায়গা তো ভালোভাবে জন্মে কিন্তু জলবদ্ধতা একদম সহ করতে পারেনা। ৮ থেকে ১০ দিন পরে গাছটি মারা যেতে পারে।এজন্য এই দিকটাতে আপনি বিশেষ করে খেয়াল রাখবেন ।
বাগান ব্যবস্থাপনা= আমাদের প্রথমেই লটকনের বাগানে কয়েকটি পুরুষ ও অধিকাংশ স্ত্রী কলম ছাড়া সংগ্রহ করে লাগাতে হবে। এতে করে পরাগায়নের সুবিধা হবে ও অধিক লাভবান হওয়া যাবে। লটকনের কেবলমাত্র ফুল আসার পরে স্ত্রী ও পুরুষ গাছ চেনা যায়। আর আপনি ঠিক তখনই বাগানে শতকরা 20 ভাগ পুরুষ গাছ রেখে বাকি পুরুষ গাছ গুলো কেটে ফেলে দেবেন। সেখানে আবার নতুন চারা লাগাতে হবে তবে এই সমস্যাটি দূর করতে হলে প্রথমে বাগানে লটকনের ইফতারি করলাম চারা লাগানো উচিত।
বর্ষার প্রারম্ভে চারা রোপনের ১০ থেকে ১৫ দিন পূর্বে ৭"৭ এটা দূরত্ব ১/১/১ মিটার আকারে গর্ত করতে হবে। প্রতিটি গর্তে কবর ১৫ থেকে ২০ কেজি ও টি এস পি ৫০০ গ্রাম এবং এমওপি ২৫০ গ্রাম সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে গর্ত ভরাট করে রেখে দিতে হবে। এই মাটিগুলো শোকরানো হলে গর্তে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে এবং গর্ত করার 10 থেকে 15 দিন পর ভালোভাবে আবার কুপিয়ে(আলগা করে) চারাবাগ কলম লাগাতে হবে।
- চারা লাগানোর পরপরই পানীয় খুঁটি দিয়ে মজবুত করে বেঁধে দিতে হবে।
- চারা রোপনের পর প্রথম দিকে ঘন ঘন সেচ দিতে হবে(পানির পরিমাণ অতিরিক্ত যেন না হয়)
- ফল ধরার পর এক থেকে দুইবার শেষ দিতে পারলেন ফলের আকার বড় হবে ও ফলন বেশি ভালো হবে
- একটি থোকায় যদি ফল বেশি থাকে তাহলে পাতলা করে দিতে হবে। ফল আহরনের পর গাছের মরা রোগাক্রান্ত ও কীটাক্রান্ত দাল ছাটাই করে দিতে হবে।
- পূর্ণবয়স্ক গাছে পরিমাণ মতো ছার প্রয়োগ করতে হবে
- উপযুক্ত সার গাছের গোড়া থেকে এক মি যতটুকু জায়গা দুপুরবেলায় ছায়া পড়েই ততটুকু জায়গা কুপিয়ে মাটি আলগা করে সবগুলো ছিটিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
রোগবালাই দমন ব্যবস্থা=অ্যানথ্রাকনোজঃ কলেটোট্রিকাম সিডি নামক ছত্রাক লটকনের আন্থ্রাকনোজ রোগের কারণ। গাছের পাতা শাখা-প্রশাখা ও ফলে রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগের প্রধান লক্ষণ হল ফলের গায়ে ছোট ছোট কালো দাগই। তাছাড়া শক্ত ছোট ও বিকৃতি আকার ফল পাকা শুরু হলে দাগ দ্রুত বিস্তৃত হতে থাকে এবং ফল ফেটে বা পচে যায়। এর প্রতিকার নিচে দেখুন।
ঢলে পড়া= ফিউজেরিয়াম নামক ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগ হয়।, প্রথমে পাতা হলুদ হয়ে আসে এবং পরে শুকিয়ে যায়।এভাবে পাতার পর প্রশাখা শাখা এবং ধীরে ধীরে সমস্ত গাছ হই ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নেতিয়ে পড়ে এবং অবশেষে মরে যায়।
প্রতিকার= এ রোগের কোন প্রতিকার নেই তবে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গুলো যদি আপনি নিতে পারেন তাহলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। আপনাকে যত দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় বার্দোমিক্সর অথবা কুপ্রাভিট/ কপার অক্সিক্লোরাইড প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ফল ঝরে যাওয়া= পরাগায়নের অভাব অধিক খরা শীত মৌসুমে এবং ফল ধরার সময় মাটিতে সেচ না দেওয়ার কারণে মাটিতে বোরনের অভাব রোগ বা প্রকার আক্রমণ ইত্যাদি অনেক কারণে ফল ঝরে যেতে পারে।
প্রতিকার= শীত বা খরা মৌসুমী নিয়মিত সেচ প্রদান করতে হবে গাছে ফুল ফোটার পর বৃষ্টি না হলে অবশ্যই নিয়মিত পরিমান মত সেচ প্রদান করতে হবে। নিয়মিত সার ব্যবহার করতে হবে বাগান বা আশে পাশের পুরুষ গাছ লাগাতে হবে।
প্রোকামাকড় দমন ব্যবস্থা= ফল ছিদ্রকারী পোকাঃ ফল ছোট অবস্থায় যখন খোসা নরম থাকে তখন এই প্রকার ফলের খোসা ছিদ্র করে ডিম পাড়ে পরবর্তী সময়ের ডিম থেকে ক্রীড়া উৎপন্ন হয় এবং ফলের নরম শাঁস খেয়ে থাকে।
প্রতিকার= আক্রান্ত ফল পোকা সহ মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে দুই মিলিগ্রাম হাড়ে পারফেকথিয়ন বা লেবাসিড ৫০ইসি মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর ৩ থেকে ৪ বার ফল ছোট অবস্থায় গাছে স্প্রে করতে হবে।
মিলিবাগ ও সাদামাছি পোকা= সাধারণত শীতকালে এদের আক্রমণে পাতায় সাদা সাদা তুলার মতো দাগ দেখা যায়।এটা পাতার রস চুষে গাছকে দুর্বল করে দেয়।পাতার বিষ্টা ত্যাগ করে এবং সেই বিষ্টার উপর শুটিমণ্ড নামক ছত্রাক জন্মে পাতার খাদ্য উপাদান ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
প্রতিকার= আক্রান্ত পাতা ও ডগা প্রকাশ সহ কেটে ধ্বংস করে দিতে হবে রগর/রক্সিয়ন ৪০ এসি প্রতিলিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে আক্রান্ত পাতা ও গাছের ডাল পাতলা প্রতি ১০ দিন অন্তর অন্তর ৩ থেকে৪ বার স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে।
চেফার বিটল= পূর্ণাঙ্গ পাতা খেয়ে ছিদ্র করে ফেলে আস্তে আস্তে সমস্ত পাতা খেয়ে জালের মতো করে ফেলে। প্রতিকার= সুমি-আলফা/ডেবিকুইন ৪০ ই সি প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ মিলি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা দমন করতে হবে।
ফল সংগ্রহ সময় ও ফলন= শীতের শেষে অর্থাৎ ফাল্গুন মাসে ফুল আসে এই গাছটিতে। আষাঢ় শ্রাবণ মাসের(জুলাই আগস্ট) মাসের ফল পাকে। ফলের রঙ হালকা হলুদ হতে ধূসর বর্ণ ধারণ করলে ফল সংগ্রহ করতে হবে। কলমের গাছে সাধারণত চার বছর বয়সে ফল আসার শুরু হয় তবে চারার ক্ষেত্রে ফল আসতে 8 থেকে 9 বছর সময় লেগে যেতে পারে। লটকন চাষের ক্ষেত্রে যে কোন পরামর্শের জন্য নিকটস্থ উপজেলা কৃষি অফিস অথবা কৃষি কল সেন্টার ১৬১২৩ এ যোগাযোগ করুন।
আশা করছি এমন আরো তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে আবারো হাজির হবো। আপনাদের এই সংক্রান্ত আরো কিছু জানার থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনি অতি অবশ্যই আপনার মতামত জানিয়ে যাবেন। আপনি কি জানতে চান সেটি বলুন আমরা আপনাকে সেটি সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
প্রতিকার= এ রোগের কোন প্রতিকার নেই তবে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গুলো যদি আপনি নিতে পারেন তাহলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। আপনাকে যত দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় বার্দোমিক্সর অথবা কুপ্রাভিট/ কপার অক্সিক্লোরাইড প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ফল ঝরে যাওয়া= পরাগায়নের অভাব অধিক খরা শীত মৌসুমে এবং ফল ধরার সময় মাটিতে সেচ না দেওয়ার কারণে মাটিতে বোরনের অভাব রোগ বা প্রকার আক্রমণ ইত্যাদি অনেক কারণে ফল ঝরে যেতে পারে।
প্রতিকার= শীত বা খরা মৌসুমী নিয়মিত সেচ প্রদান করতে হবে গাছে ফুল ফোটার পর বৃষ্টি না হলে অবশ্যই নিয়মিত পরিমান মত সেচ প্রদান করতে হবে। নিয়মিত সার ব্যবহার করতে হবে বাগান বা আশে পাশের পুরুষ গাছ লাগাতে হবে।
প্রোকামাকড় দমন ব্যবস্থা= ফল ছিদ্রকারী পোকাঃ ফল ছোট অবস্থায় যখন খোসা নরম থাকে তখন এই প্রকার ফলের খোসা ছিদ্র করে ডিম পাড়ে পরবর্তী সময়ের ডিম থেকে ক্রীড়া উৎপন্ন হয় এবং ফলের নরম শাঁস খেয়ে থাকে।
প্রতিকার= আক্রান্ত ফল পোকা সহ মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে দুই মিলিগ্রাম হাড়ে পারফেকথিয়ন বা লেবাসিড ৫০ইসি মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর ৩ থেকে ৪ বার ফল ছোট অবস্থায় গাছে স্প্রে করতে হবে।
মিলিবাগ ও সাদামাছি পোকা= সাধারণত শীতকালে এদের আক্রমণে পাতায় সাদা সাদা তুলার মতো দাগ দেখা যায়।এটা পাতার রস চুষে গাছকে দুর্বল করে দেয়।পাতার বিষ্টা ত্যাগ করে এবং সেই বিষ্টার উপর শুটিমণ্ড নামক ছত্রাক জন্মে পাতার খাদ্য উপাদান ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
প্রতিকার= আক্রান্ত পাতা ও ডগা প্রকাশ সহ কেটে ধ্বংস করে দিতে হবে রগর/রক্সিয়ন ৪০ এসি প্রতিলিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে আক্রান্ত পাতা ও গাছের ডাল পাতলা প্রতি ১০ দিন অন্তর অন্তর ৩ থেকে৪ বার স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে।
চেফার বিটল= পূর্ণাঙ্গ পাতা খেয়ে ছিদ্র করে ফেলে আস্তে আস্তে সমস্ত পাতা খেয়ে জালের মতো করে ফেলে। প্রতিকার= সুমি-আলফা/ডেবিকুইন ৪০ ই সি প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ মিলি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা দমন করতে হবে।
ফল সংগ্রহ সময় ও ফলন= শীতের শেষে অর্থাৎ ফাল্গুন মাসে ফুল আসে এই গাছটিতে। আষাঢ় শ্রাবণ মাসের(জুলাই আগস্ট) মাসের ফল পাকে। ফলের রঙ হালকা হলুদ হতে ধূসর বর্ণ ধারণ করলে ফল সংগ্রহ করতে হবে। কলমের গাছে সাধারণত চার বছর বয়সে ফল আসার শুরু হয় তবে চারার ক্ষেত্রে ফল আসতে 8 থেকে 9 বছর সময় লেগে যেতে পারে। লটকন চাষের ক্ষেত্রে যে কোন পরামর্শের জন্য নিকটস্থ উপজেলা কৃষি অফিস অথবা কৃষি কল সেন্টার ১৬১২৩ এ যোগাযোগ করুন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক,স্যার/ম্যাম, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল লটকনের উপকারিতা অপুষ্টিগুণ সম্পর্কে ও গর্ব অবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কিনা। আপনারা যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন আশা করছি তাহলে আপনি সত্যের উপর সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটিতে কোন ভুল হয়ে থাকলে অবশ্যই জানা্বেন। আপনার যদি আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগে আপনি আপনার বন্ধু কিংবা আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন তারাও উপকৃত হবে।আশা করছি এমন আরো তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে আবারো হাজির হবো। আপনাদের এই সংক্রান্ত আরো কিছু জানার থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনি অতি অবশ্যই আপনার মতামত জানিয়ে যাবেন। আপনি কি জানতে চান সেটি বলুন আমরা আপনাকে সেটি সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url