শরীর ঠিক রাখতে সকালের ২০টি ব্যায়াম ও নিয়ম
শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য আমাদের সকালটা কিভাবে শুরু করা উচিত? সকালে ব্যায়াম করলে কি কি উপকার হবে? শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ও শরীর ঠিক রাখতে সকালের কি কি ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
ব্যায়াম করার অপকারিতাঃ-
শরীর ঠিক রাখতে সকালের ব্যায়াম আমাদের সুস্থ দেহ গঠনের জন্য অনেক কার্যকরী। প্রতিদিন নিয়মিত সকালে ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-পতঙ্গের পরিবর্তন দেখা যায়। ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ-
সূচিপত্র
শরীর ঠিক রাখতে সকালের ব্যায়ামগুলো
মনোবিদরা বলে থাকেন যে, শরীর সুস্থ থাকলে মন ও সুস্থ থাকে। সূর্যের আলোতে যোগব্যায়াম করা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ শরীর গঠনের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে যোগব্যায়াম। কয়েকটি যোগব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ-
সূর্যলোকে ব্যায়ামঃ-আমাদের সবার প্রায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে সূর্যালোক দেখে। সূর্যের আলোতে ভোরের প্রথমে যোগব্যায়াম করুন। এর মানে হচ্ছে সকালের সূর্যের আলো গায়ে লাগান। এই কাজটি প্রতিদিন নিয়মিত করতে পারলে শরীরের অনেক পরিবর্তন দেখা দিবে।
বৃক্ষ আসনঃ-আপনার শরীরকে সোজা করুন এবংসোজা হয়ে দাঁড়ান এরপর ডানপাড় মাটির সঙ্গে ৯০ ডিগ্রী কোণ করে ভাঁজ করেন। তারপর হাত দিয়ে পা ধরে শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে ভাঁজ করা পাকে বাঁ পায়ের উরুর সঙ্গে ঠেকান।
তারপর হাতের কব্জি দুটি ভাঁজ করে মাথার উপরে সোজা করে তুলুন। মুখ সামনের দিকে রেখে পিঠ পুরো সোজা করুন। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিন। একই জিনিস আবার বাঁ পায়ের সাথে করতে থাকুন।
তদাসনঃ-পা দুটি পাশাপাশি রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ন।পিঠ একদম সোজা করে রাখুন ও দুটো তালু একসঙ্গে করে চেপে ধরুন। তারপর শ্বাস নিন আর জোড়া হাত দুই পাশে তুলুন। খেয়াল রাখবেন হাত দুটি যেন পৃথক না হয়। মাথা পেছনে আর দুই কাঁধের দিকে হেলান। সকালে এইভাবে 15 থেকে 20 সেকেন্ড করুন। চাপ কমাতে এই আসন অনেক কার্যকরী।
মাজার আসনঃ-সোজা হয়ে দাঁড়ান ,এরপর হাঁটু ভাঁজ করুন , তারপর মাটিতে শরীরের উপরের অংশ উপুড় করুন। ফ্লোর বা ম্যাটের উপর তালু ও হাঁটু বসান। নিশ্চিত করুন আপনার কাধের ভর যেন তালু আর হাঁটুর উপর থাকে।
এই অবস্থায় থাকার পর যখন প্রশাস নেবেন পিঠ আবার নিচের দিকে নামান আর উপরের দিকে তাকান এভাবে ৮ থেকে ১০ বার করুন নিয়মিত। এতে করে আপনার মাজার যে সব হাড়ের সমস্যা আছে এসব অনেকটাই কমে আসবে এবং আপনি নিজেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
সকালে ১০ থেকে ২০ মিনিট হাঁটলেই মিলবে যেসব উপকার
আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ব্যায়াম করার কোন বিকল্প নেই। আবার ব্যায়ামের মধ্যে সকালে হাঁটা সবচাইতে সহজ একটি ব্যায়াম। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটার অভ্যাসের মাধ্যমে দিনটি শুরু করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনার শরীরের অনেক পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে , প্রতিদিন সকালে হাঁটলে শরীরের এত উপকার হয় যেটা কোন ওষুধ দিয়েও হয় না। সকালে হাঁটার অভ্যাসের মাধ্যমে মন ও মেজাজ দুটোই ভালো থাকে। শরীর সুস্বাস্থ্য, সুস্থ- সবল রাখতে হলে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে একটু হলেও হাঁটাচলা করতেই হবে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে হাঁটলে মন ও মেজাজ দুটোই ভালো থাকে। শরীর ঠিক রাখতে সকালের নিয়মিত হাঁটা আমাদের শরীর এক্টিভ রাখে।আপনি যদি সকালে নিয়মিত হাটার মাধ্যমে আপনার দিন শুরু করেন, তাহলে সারাদিন আপনি ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে থাকবেন।
বিভিন্ন গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা নির্দিষ্ট সময় মতো হাঁটাচলা নিয়মিত করলে আমাদের শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়ে। সারাদিন শরীরের ক্লান্ত ভাব ও শরীরের ঝিমানী ভাব থাকে না।
আবার অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কেরা যদি সকালে ২০ মিনিটের জন্য বাইরে হাঁটেন তাহলে তারা যে ২০মিনিট ঘরের ভেতরের হাঁটছেন তার চেয়ে বেশি জীবনীশক্তি অনুভব করেন। সিঁড়িতে ১০ মিনিট হাটা ১৯ জন নারীর জন্য এক কাপ কফির চেয়ে বেশি শক্তি দায়ক ছিল।
আরো পড়ুন: আখরোট ও মধু একসাথে মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
মেজাজ উন্নত করেঃ- ও হাটার মাধ্যমে শরীরবৃত্তীয় ও উপকারিতা ও রয়েছে। সকালের নিয়মিত হাঁটা মানসিক চাপ , ক্লান্তি ভাব , উদ্বেগ , বিষন্নতার ঝুঁকি কমাতে অনেক সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন সকালে উঠে একটু হাঁটাহাঁটি করলে জীবনের একঘেয়েমি দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে দেখবেন নিজেকে অনেক ফেস লাগবে।
ওজন কমায়ঃ-
শরীর ঠিক রাখতে সকালের নিয়মিত হাঁটা আপনার শরীরের ওজন কমানোর লক্ষ্য পূরণ করতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন নিয়মিত বিচ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য একটু মাঝারি গতিতে হাটা আপনার শরীরে ১৫০ ক্যালোরি পর্যন্ত ব্রান করতে পারে । এতে করে আপনার শরীরের ওজন কমতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ-
প্রতিদিন নিয়মিত সকালে ব্যায়াম ও হাটা আপনার মানসিক স্বস্তি এবং সারাদিন কি উজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা সকালে নিয়মিত হাটার মাধ্যমে দিন শুরু করেছিলেন তারা জ্ঞান অর্জনে উন্নত করেছে। সকালে প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটাচলা আপনাকে আরো সৃজনশীল ভাবে চিন্তা করতে সাহায্য করে।
রাতের ঘুমের উন্নতিঃ-
সকালে প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটাচলা রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে সাহায্য করে। আপনারা যারা নিয়মিত সকালে ব্যায়াম করেন তাদের রাতে ঘুম ভালো হয়। আপনারা যদি সকালবেলা উঠে হাঁটাচলা করেন, তাহলে নেচারাল স্লিপ হরমোন মেলারটোনিনের ক্ষরণ সঠিকভাবে হবে। এর ফলে সহজে ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন এবং অনিদ্রার সমস্যায় ভুগতে হবে না।
পেশি শক্তিশালী করেঃ-
প্রতিদিন নিয়মিত সকালের হাঁটা আপনার পায়ের পেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে। আজ এই তরুণ প্রজন্মের অনেকের ক্ষেত্রেও মাসেল এবং জয়েন্ট পেন হতে দেখা যায়। প্রতিদিন সকালে উঠে হাঁটাচলা করুন দেখবেন কয়েকদিনের মধ্যেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
ভালো ফলাফল পেতে প্রতিদিন নিয়মিত মাঝারি থেকে দ্রুতগতিতে হাঁটাচলা করুন। আপনার দৈনন্দিন রুটিন পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন এবং সিঁড়ি বেয়ে উঠুন। এভাবে নিয়মিত এসব করতে থাকলে আপনার শরীরের পরিবর্তন দেখা দিবে।
সকালের যে ব্যায়াম শরীর ভালো রাখবে
প্রতিদিন নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠা ও শরীর চর্চা করা শরীরের পক্ষে অনেক ভালো। তবে মনে রাখবেন আপনাকে খুব ভারী ব্যায়াম করতে হবে এমন কোন কথা নয়। সকালে হালকা একটু হাটা বা অন্য কোন কিছু একটু ব্যায়াম করা এসবই যথেষ্ট।
এক সাক্ষাৎকারে বিশেষজ্ঞ ডক্টররা বলেন, শরীর ঠিক রাখতে সকালের(সকাল সকাল) ঘুম থেকে ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। এছাড়াও কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট হাটা ও হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। হাঁটার নিয়ম এমন যে হাঁটতে হাঁটতে যেন শরীর থেকে ঘাম ঝরে।
আসুন জেনে নেই কোন ব্যায়াম করবেনঃ-
চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন দুই পা সামনে রেখে। এরপর দুই হাত কোলের উপর রেখে মাথা ও ঘাড় সোজা রাখুন। এরপর এক পা মাটিতে চেপে রেখে অন্য পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের ভর দিয়ে গোড়ালি উঁচু করে মেরুদন্ড টানটান করুন। তারপর শ্বাস নিতে নিতে কিছুক্ষণ এই অবস্থানে থেকে আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়ুন।
এবার অন্য পা ও একইভাবে বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে শ্বাস ছেড়ে আগে জায়গায় আসুন। এরপর একই সঙ্গে দুই পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে গোড়ালি উঁচু করে শ্বাস টানুন। শ্বাস ছেড়ে আগের অবস্থানে ফিরে আসুন।
প্রতিদিন নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে এভাবে কমপক্ষে পাঁচবার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত এই ব্যায়াম করতে থাকলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং অনেক পরিবর্তন দেখা দিবে।
আরো পড়ুন: টবে বারোমাসি সবজি চাষ পদ্ধতি
২০টি ব্যায়াম ও ব্যায়ামের নিয়ম
আমাদের শরীর ঠিক রাখতে সকালের নিয়মিত ব্যায়াম করা কতটা প্রয়োজন আমরা তা সবাই জানি। তবে সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম না জেনে ভুল পদ্ধতিতে ব্যায়াম করলে ফলাফল উল্টো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর মানে, ভালোর চেয়ে ক্ষতি পরিমান বেশি হতে পারে। আমাদের শরীর ,মন সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে হলে আমাদের ব্যায়াম করার নিয়ম গুলি ভালোভাবে জেনে শুরু করা উচিত।
যেমনঃ-
- আমাদের শারীরিক ক্ষমতা ও বয়স অনুযায়ী ব্যায়ামের ধরন নির্ধারণ করতে হবে।
- ব্যায়াম করার আগেই আমাদের ওজন বিএমআই ইত্যাদি লিখে রাখতে হবে। এর কারণ হচ্ছে ব্যায়াম করার পর কি পরিমান উপকার হচ্ছে তা প্রতি মাসে খেয়াল করার জন্য।
- খাবার খেয়ে মোটেও ব্যায়াম করা যাবে না। অন্ততপক্ষে খাওয়ার দুই ঘন্টা পর ব্যায়াম করতে হবে। না হলে শরীরের ক্ষতি দেখা দিবে।
- খেয়াল রাখতে হবে ব্যায়াম করার সময় যেন টাইট পোশাক শরীরে না থাকে। ঢিলাঢালা ও হালকা আরামদায়ক পোশাক পড়ে ব্যায়াম করা উচিত।
- প্রথম অবস্থায় ভারী ব্যায়াম করা মোটেও উচিত নয়। আগে দশ মিনিট একটু হাঁটাচলা করে নিন তারপর ব্যায়াম করতে থাকুন।
- ব্যায়াম করার সময় লক্ষ্য রাখবেন কখনো যেন খুব কষ্ট করে নিঃশ্বাস না নেন। না হলে আমাদের শরীর ভালো থেকে ক্ষতি হতে পারে।
- যেকোনো ধরনের শারীরিক কষ্ট বা অস্বস্তি নিয়ে ব্যায়াম করবেন না। এমন অবস্থায় যদিও করেন সাথে সাথে থামিয়ে দিবেন।
- সকাল অথবা সন্ধ্যা যে সময় হোক না কেন প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময় ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এতে করে শরীরের অনেক লাভ হবে।
- সব বয়সের মানুষেরই জন্য একটি নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে। এই ব্যায়াম করার জন্য চিকিৎসক এবং প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন প্রয়োজনে।
- গর্ভবতী নারীদের জন্য কিছু ব্যায়াম রয়েছে। এগুলো নিয়মিত করলে আপনাদের শরীরে মানসিক চাপমুক্ত সুস্থ থাকবে।
- মন খারাপ থাকলে ব্যায়াম করতে যাবেন না। প্রথমে মন ভালো করুন ,আনন্দ নিয়ে ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। আমরা যদি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম শরীরচর্চা না করি তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে এজন্য চেষ্টা করব প্রতিনিয়ত সময়ের জন্য হলো ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার।
- নিয়মিত হাটার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং নিজ শরীর সুস্থ রাখুন।
২০টি ব্যায়ামঃ-
শরীরচর্চা বিষয়ক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন যে নিচের ব্যায়ামগুলো দীর্ঘ .১ থেকে ২ মিনিট করে শরীর চর্চা করলে প্রায় 45 মিনিট ব্যায়ামের সমতুল্য।
- স্পট জগিংঃ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে জগিং করা পুরো শরীরের ব্যায়ামকে স্পট জগিং বলে। এজন্য সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত বুকের কাছে রেখে একই স্থানে দাঁড়িয়ে বারবার লাফাতে হয়। এভাবে কিছুক্ষণ লাফানোর পর বিশ্রাম নিতে হবে। এভাবে .৩ থেকে ৪ বার করতে হবে।
- ওয়াম-আপঃ আমাদের শরীরের সব পেশির ব্যায়াম একসঙ্গে করতে চাইলে ওয়াম-আপ এর বিকল্প নেই ।'স্কোয়াট' বা উটবস দিয়ে শুরু করতে হবে। তারপর বুকডন বা পুশ আপ প্ল্যাঙ্ক দেওয়ার মত করে দুই কুনইতে শরীরের ভর দিয়ে রাখতে হবে। ডান পাশ সামনে এনে ভাঁজ করতে হবে পুশ -আপ প্লাঙ্ক দেওয়া অবস্থায়। এভাবে .৪ থেকে ৫ বার ব্যায়াম গুলো নিয়মিত করতে হবে।
- পাওয়ার প্লাঙ্কসঃ-আমাদের শরীরের জন্য সম্পূর্ণ একটি ব্যায়াম হলো এটি। প্রথমে কয়েকবার উট- বস, তারপর ৫-৭ টি বুকডন। এরপর দুই হাত মাটিতে রেখে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। তারপর আস্তে আস্তে দুই পা সোজা রেখে শরীরকে হালকা করে উপরে উঠাতে হবে। প্রত্যেক আসনগুলো ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে
- স্ট্রেচিংঃ পেটের ভরে শুয়ে দুই হাত মাথার উপরে ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর দুই পা ও হাত ছড়িয়ে দিয়ে শরীরকে উল্টো ধনুকের মত করতে হবে। এই অবস্থায় থেকে 10 সেকেন্ড থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে হবে। এভাবে নিয়মিত ব্যায়ামটি করতে থাকতে হবে।
- বাপ্রিজঃ-এক মিনিটের মধ্যেই ব্যায়াম সারতে চাইলে ৫টি 'বারপি' করতে পারেন। এটা করার জন্য প্রথমেই হাটু বাজ করে বসতে হবে তারপর বসা অবস্থা থেকে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। তারপর কয়েকবার একই নিয়মে ব্যায়ামটি করতে হবে।
- বিরতি দিয়ে ব্যায়ামঃ-প্রথমে ১০ মিনিট দৌড়ান, এরপর ৫থেকে ৭বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করুন। নিয়মিত ৫ থেকে ৬ বার ব্যায়ামটি করতে থাকুন।
- এক্সটেনশনঃ এই পেম কি করার ক্ষেত্রে আরেকজনের সাহায্য নিতে হয়। পা উঠানোর সময় অন্য কেউ পায়ে হালকা চাপ দিয়ে রাখত হয়। অথবা পায়ে ডাম্বেল বেঁধে বা ঝুলিয়ে ব্যায়ামটি করা যায়।
- ওয়ান লেগ স্টেপ আপ
- ওয়াল স্কোয়াট
- ডাম্বেল লাজেন্স
- ডাম্বেল স্কোয়াট
- অধোমুখশ্বানাসন(অর্থ =অধো মুখ {নিচে মুখ} শ্বান আসন)
- অধোমুখ বৃক্ষাসন(অর্থ=Handstand{Downward-Facing Tree}
- আকর্নধনুরাসন(অর্থ=Bow posture up to ear)
- অনন্তাসন(অনন্ত নাগের ন্যায় আসন)
- অর্ধনাবাসন(অর্থ= অর্ধেক নৌকার আকারে আসন)
- বালাসন(শিশুদের মত আসন)
- ভেকাসন(ব্যাঙের মতো আসন)
- বুকডন
- পুশ-আপ
৩৫থেকে ৪০ বয়স পরে ব্যায়াম
আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের শক্তি ও তেজ কমে আসে। বিশেষ করে 35 থেকে 40 এর মাঝামাঝিতে এইটা হয়। তাই যেকোনো শরীর চর্চার আগে বুঝে নিতে হবে আমাদের দেহে সেই ভার সইতে পারবে কিনা।
শরীরে এই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যায়াম পন্থা জানিয়েছেন শরীরচর্চা বিষয়ক অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বেশি 'স্ট্রেচ'ঃ-আমাদের বয়স ৪০ এ পৌঁছালে যে কোন ব্যায়ামের ক্ষেত্রে আগে বেশি করে 'স্ট্রেচিং' করাটা অবশ্যক। এর কারণ আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পেশি শক্ত হতে থাকে এবং হাড় গুলো নরম হতে থাকে।
এজন্য আমাদের শরীরের নমনীয়তা এবং নড়াচড়ার স্বাচ্ছন্দ আনতে এই স্ট্রেচিং ও ওয়াম- আপ এর প্রতি বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া খুবই প্রয়োজন। আমাদের শরীরের পেশির নমনীয় ভাব ও শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখতে ব্যায়াম করার সময় আপনারা ফোম রোল ব্যবহার করতে পারেন।
বাড়তি শক্তি বর্ধক ব্যায়ামঃ-আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের পেশির ভার কমতে থাকে, এতে করে শরীরের পেশি শুরু হতে থাকে, বিপাকের হার কমতে থাকে। তাই আমাদের শরীরের পেশি বাড়াতে
উঠ-বস,বুকডন,ঘাড়ের ব্যায়াম ইত্যাদি সাধারণ শরীরচর্চা দিয়ে শুরু করতে হবে।
এমন ওজন ব্যবহার করতে হবে যা আমাদের শরীরের জন্য চ্যালেঞ্জিং , কিন্তু অতিরিক্ত নয়। এতে করে আমাদের শরীরের পেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে ও ক্যালোরিও পুড়বে।
তীব্রতা কমাতেঃ-ব্যায়াম করার সময় খেয়াল রাখবেন যদি ব্যথা অনুভূতি হয় তাহলে বুঝবেন সেটা আপনার শরীরের জন্য অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনি ব্যায়ামের রুটিনে হাঁটাহাঁটি ,সাঁতার কাটা ইত্যাদির মাধ্যমে হালকা ব্যায়ামগুলো করতে পারেন।
৩০ থেকে ৪০ এই বয়সে পর আমাদের শরীরের পেশি ও হাড় এর উপর বেশি বাড়তি চাপ দেওয়া যাবে না। এতে করে আমাদের শরীরে অনেক ইফেক্ট ফেলতে পারে যা আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অক্ষম।
ভারসাম্য বাড়ানঃ-আমরা ব্যায়াম করতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলি ,এই বয়সে এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ ২৫ থেকে ৪০ বয়সের পর আমাদের দেহের অনেক শক্তি ক্ষমতা কমে আসে। এইজন্য আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যায়াম গুলো করতে হবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রামঃ-এই বয়সে এসে আমাদের বযায়াম এর পাশাপাশি বিশ্রামও নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এর কারণ হলো ঘুমের সময়ে শরীর নিজেকে মেরামত করে পরবর্তী দিনের জন্য। আমাদের শরীরে প্রতিদিন নিয়মিত .৭থেকে ৮ ঘন্টা বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন হয়।
সকালে ব্যায়াম করার ১৫টি উপকারিতা
আমাদের প্রায় অনেকেরই সমস্যা রয়েছে রাতে ঘুমানোর। আমরা অনেকেই রাতে ঘুম না হওয়ার কারণে ওষুধ খেয়ে থাকি। আর ঘুমের ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা অনেক মারাত্মক ও ক্ষতিকারক।
আমরা যদি নিয়মিত প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাটি তাহলেই ঘুমের কোন দুশ্চিন্তা নেই ,রাত্রে অনেক ভালো ঘুম হবে। তবে আমরা অনেকেই অলসতার কারণে এটা করতে অক্ষম। তবে আপনি যদি অলসতা না করে নিয়মিত ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাঁটতে পারেন তাহলে আপনার ঘুমকে খুঁজতে হবে না ,ঘুমই আপনাকে খুঁজে নিবে।
সকালে ব্যায়ামের 15 টি উপকারিতাঃ-
- চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন , আমরা যারা নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে 20 মিনিট ব্যায়াম করি, অন্যদের তুলনায় আমাদের 50 শতাংশ কম মানসিকচাপে ভুগবো।
- গবেষণায় আরো বলেছে যে, শরীরে স্ট্রেস হরমোন করটিসোলের পরিমাণ কমিয়ে দেয় ব্যায়ামে। প্রেম আমাদের শরীরকে অনেক আরাম দেয়। তাই যোগসন ও মেডিটেশন করলেও ভালো ফল পাবেন।
- সকালে নিয়মিত ব্যায়ামও শরীর চর্চা করলে 'ন্যাচারাল ফিল গুড' হরমোন নিঃসৃত হয় । এতে আমাদের মন ও মেজাজ ফুরফুরে থাকে।
- সকালের ব্যায়াম ও শরীরচর্চা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে থাকে । ফিটনেস ঠিক রাখতে সুস্থ থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- সকালের করা ব্যায়াম আমাদের সারাদিন কর্মক্ষম রাখবে ও এনার্জি দেবে। ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের অক্সিজেন নিতে অনেক সাহায্য হয় ও অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
- সকালে নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে আমাদের শরীরের ক্ষুধা বাড়ে। শরীর চর্চা করলে খাবারের অনিয়ম দূর হয়।
- সকালে ঘুম থেকে উঠেই বিশ মিনিট ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করুন। এতে করে পুরো দিনের জন্য আপনার শরীরে এনার্জি স্টোর হয়ে যাবে।
- নিয়মিত সকালের ব্যায়াম আমাদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। পাশাপাশি সকালে নিয়মিত শরীর চর্চা করলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
- সকালে প্রতিদিন নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় ব্যায়াম করার ফলে , আমাদের শরীরের ক্ষুধার হরমোন কমিয়ে ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- সকালের প্রেম আমাদের যেকোনো কাজের ব্যাপারে ফোকাস করা সহজ করে থাকে।
- বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে যে , আমাদের প্রায় অনেকের শরীরে প্রচুর পরিমাণে ওজন বেড়ে যাচ্ছে এবং শরীরের প্রচুর চর্বি জমে যাচ্ছে এজন্য আমাদের নিয়মিত প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীরচর্চা ও ব্যায়াম করতে হবে। এতে করে আমাদের শরীরে অনেক পরিবর্তন দেখা দিবে।
- সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে, রাত্রে যে ঘুম হয় সে ঘুমের মাধ্যমে আমাদের শরীরের দূষিত পদার্থ গুলো বের হয়ে যায়।
- নিজেকে সুস্থ ও সবল-সতেজ রাখতে সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- সকালের নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও অসুস্থতার ঝুঁকি কমায়।
- সকালের ব্যায়াম আমাদের ফুসফুসের ও শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়িয়ে থাকে।
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
শারীরিক ব্যায়াম আমাদের প্রায় সবার জন্যই খুবই কার্যকরী। তবে ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে। যেমনঃ-কখন ব্যায়াম করতে হবে? কত সময় ব্যায়াম করতে হবে? এসব যাবতীয় বিষয়গুলো জেনে ব্যায়াম করতে হবে ।আসুন জেনে নেইঃ-
ব্যায়াম করার সবচাইতে ভালো দিক হচ্ছে আমাদের শরীরের ওজন কন্ট্রোল থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর কারণে একজন মানুষ দীর্ঘ সময় সুস্থ থাকতে পারে তাই । ব্যায়ামের বিকল্প অন্য কিছু নেই।
ব্যায়াম করার উপকারিতাঃ-
ব্যায়াম সুস্থ জীবন যাপনের জন্য লাইফ স্টোরি স্টাইলে যোগব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। ব্যায়াম আমাদের শারীরিক মানসিকভাবে সুস্থ রাখে, এখনকার ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে মানুষের ব্যায়াম করার সময় নেই।
কিন্তু তারপরও দিনে একটি নির্দিষ্ট সময় আপনাকে ব্যায়াম করার জন্য, নির্ধারণ করতে হবে কারণ ব্যায়াম করলে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যা আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন পরিচালিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে।
সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতাঃ-
ব্যায়াম ও শরীরচর্চা অনেক উপকার হয়। প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম আমাদের শরীরে বেশি শক্তিশালী করে সকালে টেস্ট স্ট্রেরনের মাত্রা শরীরে বেশি হয়। তাই সকালে অধিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের শরীর বেশি শক্তিশালী হয়। বেশি ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীর সতেজ হয় এবং যেকোনো কাজ সহজ করে।
আমরা যারা মানসিক চাপ নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি যার কারণ আমরা আমাদের প্রতিদিনের কাজ সঠিকভাবে করতে পারছি না। ফলে একজন মানুষের অসুস্থতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।সকালের ব্যায়ামের উপকারিতা অনেক রয়েছে।সকালের ব্যায়াম আমাদের মানসিক চাপ থেকে বাঁচিয়ে রাখে এবং শরীর গঠনে সাহায্য করে।
সবচেয়ে উপকারি ব্যায়ামঃ-
ব্যায়ামের মধ্যে সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম হলো দৌড়ানো।। দৌড়ালে আমাদের শরীরের কর্মক্ষম এবং সুস্থ থাকে।ফলে দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকা যায়। ব্যায়ামের মূল উদ্দেশ্য বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলা এবং ফিটনেস তৈরি করা।
প্রতিদিন নিয়মিত এক ঘন্টা করে দৌড়ালে প্রায় ৮০০ ক্যালোরি পড়বে শরীর থেকে। এক্ষেত্রে সবজিতে উপকারী ব্যায়াম হচ্ছে আপনি নিজ বাড়িতে বসে শারীরিকভাবে যদি ব্যায়াম করতে পারেন সেটি আপনার শরীরের জন্য অনেক কার্যকরী হয়ে থাকবে।
আমেরিকার কাউন্সিলর অফ এক্সারসাইজের জ্যৈষ্ঠ পরামর্শদাতা সেম দিয়াগোর কলেজর শরীর চর্চা বিদ্যার সহকারী অধ্যাপক জেসিকা মিথুস বলেন যে, এটা সত্য যে ব্যায়ামের পর শরীরে অল্প কিছু ব্যথা অনুভূতি হয়, ফলেই ব্যথার মানে এই হল যে আপনার মাংসপেশি শক্তিশালী হচ্ছে এই জন্য এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
তিনি কিছু সতর্কতা নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেন কিছুটা নির্দিষ্ট ব্যথা জটিলতার লক্ষণ যেমন অতিরিক্ত ব্যায়ামের ব্যাথা সাধারণ ব্যাথা আর জটিলতার লক্ষণ সুযোগ ব্যথার পার্থক্য চিহ্নিত করাটা মূল কথা।
সাধারণত ব্যায়াম করার ফলে কোন ক্ষতি অথবা অপকারিতা হয় না। তবে বয়স ও সময় শরীরের ভার এসবের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আমার কোন দিকটি ক্ষতি হচ্ছে এইসব বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উত্তম এর ফলে শরীর সুস্থ দেহ গঠনে কার্যকরী হয়ে থাকবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url